ষড়ঋতুর এই গ্রাম বাংলার বারো মাসে তেরো পার্বনে নবান্নের উৎসব অন্যতম। নবান্ন (নব+অন্ন) অর্থ নতুন অন্ন বা নতুন ফসল। নতুন ফসল কৃষকের ঘরে ওঠে এবং নতুন চালের তৈরি পিঠা পায়েস খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। এসময় কৃষক পাড়া নবান্ন উৎসবে মেতে ওঠে যে উৎসব শহরে পালন করা হয়না। যে কারনে গত বৃহস্পতিবার, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ (১৭ই নভেম্বর ২০২২) আমাদের ওয়ার্ডব্রীজ স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বাঙালির এই চিরায়ত আনন্দমুখর উৎসব সম্পর্কে ধারণা দিতে স্কুল প্রাঙ্গণে "নবান্ন ও পিঠা উৎসব ১৪২৯ বঙ্গাব্দ" এর আয়োজন করা হয়েছিল।
এই আয়োজনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও জীবনাচার সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের স্কুলকে গ্রাম্য আবহে সাজানো হয়েছিল, যেমন খড়ের চাল, লাউয়ের মাচা, মাটির হাড়ি, শিকা, ঢেঁকি, পলো, জীবন্ত মুরগী, কুলা, ডালা, হাতপাখা এবং বিভিন্ন রকমের খাবার যেমন মুড়ি, চিঁড়া, খেজুরের গুড়, নারকেল খই,নকুল দানা ও চিড়ার মোয়া ইত্যাদি। এগুলো দেখে স্কুল প্রাঙ্গণকে ছোট একটি গ্রাম মনে হচ্ছিলো। স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা সবাই গ্রামীণ আদলে গামছা চেকের তাঁতের শাড়ি ও পাঞ্জাবী পরিধান করেছিলো। কোরআন তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত ও শপথ বাক্য পাঠের মাধ্যমে আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নাচ গান ও কবিতা আবৃত্তিতে ভরপুর একটি ছোট মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটির প্রধান আকর্ষণ ছিলো পিঠা উৎসবের আয়োজন। যেখানে ভাপা পিঠা, চিতুই পিঠা, পুলি পিঠা, ঝাল পুলি, নকশী পিঠা, তেলের পিঠা, গোলাপ পিঠা, ও মজাদার খেজুর গুড়ের চা দিয়ে স্টল সাজানো হয়েছে।সব মিলিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা একটি পরিপূর্ণ গ্রামীণ পরিবেশে নবান্নের স্বাদ পেয়ে আনন্দে মুখরিত হয়ে উঠে।